HSC ICT chapter: 1 জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং | এর ব্যবহার ও প্রয়োজনীয়তা

 

জেনেটিক  ইঞ্জিনিয়ারিং কী ? 

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং হলো বিভিন্ন প্রযুক্তির সমন্বয় যার সাহায্যে কোষের জেনেটিক কাঠামো পরিবর্তন করে নতুন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন উন্নত বা অভিনব জীব উত্পাদন করা হয়।



জীব অর্থাৎ প্রাণী বা উদ্ভিদের ক্ষুদ্রতম একক হলো কোষ। কোষের প্রাণকেন্দ্রকে নিউক্লিয়াস বলা হয়। নিউক্লিয়াসের ভিতরে বিশেষ কিছু পেঁচানো বস্তু থাকে যাকে ক্রোমোজোম বলা হয়। ক্রোমোজোমের মধ্যে আবার চেইনের মত পেঁচান কিছু বস্তু থাকে যাকে DNA(Deoxyribo Nucleic Acid) বলা হয়। এই DNA অনেক অংশে ভাগ করা থাকে। এক একটি নির্দিষ্ট অংশকে জীন বলা হয়। এই জীন প্রাণী বা উদ্ভিদের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য বহন করে থাকে। অর্থাৎ প্রাণী বা উদ্ভিদের বিকাশ কীভাবে হবে, আকৃতি কীরুপ হবে তা কোষের DNA সিকোয়েন্সে সংরক্ষিত থাকে।

 

যেমনঃ ধরা যাক একটি আমের জাত উচ্চফলনশীল কিন্তু স্বাদে মিষ্টি কম। অপরদিকে অপর একটি আমের জাত কমফলনশীল কিন্তু স্বাদে অনেক মিষ্টি। এক্ষেত্রে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর সাহায্যে উচ্চফলনশীল আমের জিনের সাথে মিষ্টি আমের জিনের সংমিশ্রণে নতুন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন উচ্চফলনশীল ও মিষ্টি আম উৎপন্ন করা যায়।

অন্য ভাবে বলা যায়, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যা ডিএনএ অপসারণ বা প্রবর্তন করে কোনও জীবের জিনগত কাঠামোর পরিবর্তন করে। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং একটি জীব থেকে সরাসরি জিন নিয়ে অন্যটিতে স্থাপন করে। এটি অনেক দ্রুত, কোনও জীব থেকে কোনও জিন নিয়ে অন্যটিতে স্থাপন করতে ব্যবহৃত হয় এবং অন্যান্য অপ্রত্যাশিত জিনগুলি যুক্ত হতে বাধা দেয়। 

 

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর অপর নাম কী?

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, যাকে জেনেটিক মডিফিকেশন বা জেনেটিক ম্যানিপুলেশন বলা হয়, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ  বায়োটেকনোলজি ব্যবহার করে কোনও জীবের জিনের সরাসরি ম্যানিপুলেশন বা পরিবর্তন করা হয়।

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর জন্য যে পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয় তাকে রিকম্বিনেন্ট DNA (DeoxyriboNucleic Acid) – প্রযুক্তি বা জিন ক্লোনিং বলা হয়।

 

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর জনক কে?

১৯৭২ সালে Paul Berg বানরের ভাইরাস SV40 ও  lambda virus এর DNA এর সংযোগ ঘটিয়ে বিশ্বের প্রথম রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ অণু তৈরি করেন। এই জন্য Paul Berg কে জেনেটিক  ইঞ্জিনিয়ারিং এর জনক বলা হয়।

রিকমবিনেন্ট DNA প্রযুক্তির ধাপসমূহ  

১। DNA নির্বাচন

২। DNA এর বাহক নির্বাচন

৩। DNA খণ্ড কর্তন

৪। খণ্ডনকৃত DNA প্রতিস্থাপন

৫। পোষকদেহে রিকম্বিনেন্ট DNA স্থানান্তর

৬। রিকম্বিনেন্ট DNA এর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং মূল্যায়ন।

 

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং যেভাবে কাজ করে 

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা করার জন্য ইনসুলিনের একটি উদাহরণ দেখা যাক, যা আমাদের রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে- 

  • সাধারণত অগ্ন্যাশয়ে ইনসুলিন উত্পাদিত হয়, তবে টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ইনসুলিন উত্পাদন নিয়ে সমস্যা হয়।
  • ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের তাই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে ইনসুলিন ইনজেকশন করতে হয়।
  • তো, পূর্বে রোগীদের জন্য এই ইনসুলিন সরবরাহ করা হতো শূকর থেকে। শূকর হত্যা করে ইনসুলিন সংগ্রহ করতে হতো।
  • এরপর রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ প্রযুক্তির মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে ইনসুলিন উৎপাদন শুরু হয়।
  • এক্ষেত্রে ইকোলাই ব্যাকটেরিয়া  ব্যবহার করে কম খরচে অধিক পরিমাণ ইনসুলিন উৎপাদন সম্ভব হয়।
  • এই প্রক্রিয়ায়, মানুষের শরীরের ইনসুলিন উৎপাদনকারী জিনটি এনজাইম দ্বারা কর্তন করে ইকোলাই ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএতে স্থাপন করা হয় এবং ল্যাবরেটরিতে ইলোকাই ব্যাকটেরিয়ার বংশবিস্তার করানো হয়। ওই ট্রান্সজেনিক ইকোলাই ব্যাকটেরিয়াগুলোই ইনসুলিন উৎপাদন করে।

 

HSC ICT প্রথম অধ্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ টপিকসমূহ

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ব্যবহার ও প্রয়োজনীয়তা

এই প্রযুক্তি বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় কৃষি খাতে। কৃষি গবেষণায় এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই পর্যন্ত অনেক ট্রান্সজেনিক ফসল  আবিষ্কার করা হয়েছে। তার মধ্যে উন্নত প্রজাতির ধান উল্লেখযোগ্য। এই প্রযুক্তির সুষ্ঠ ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের খাদ্য সমস্যা অনেকটা দূর করা সম্ভব। এছাড়া নিম্ল লিখিত কাজে ব্যবপভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যথাঃ

১। শস্যের গুণাগুণ মান বৃদ্ধি করা

২। শস্য থেকে সম্পূর্ণ নতুন উপাদান উৎপাদন করা

৩। পরিবেশের বিভিন্ন ধরণের হুমকি থেকে শস্যকে রক্ষা করা

৪। শস্যের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো

এছাড় উন্নতমানের ফসল উৎপাদন, গৃহপালিত পশু উৎপাদন, রোগের চিকিৎসা, হরমোন তৈরি, ভাইরাসনাশক, মৎস্য উন্নয়ন, ফারমাসিউটিক্যাল পণ্য উৎপাদন, টিকা ও জ্বালানি তৈরি, জেনেটিক ত্রুটিসমূহ নির্ণয়, পরিবেশ সুরক্ষা ইত্যাদি ক্ষেত্রে।

 

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর ক্ষতিকর দিকগুলো

১। রিকম্বিনেন্ট ডিএনএ  যদি কোন কারণে ক্ষতিকর হয়ে পড়ে তাহলে এর প্রভাবে জীব জগতে বিপর্যয় নেমে আসবে।

২। নিবেশিত জিন যদি ক্ষতিকর প্রোটিন সংশ্লেষণ করে তাহলে ক্যান্সার সহ নতুন রোগ হতে পারে।


NAME: ICT HEAD

MOBILE: 01818799572

Follow us on Facebook : Click here to see more

ADDRESS: Dhaka, Bangladesh

Previous Post Next Post

Making Ict Easier For Everyone

HSC ICT

Contact Form