HSC ICT chapter: 1 বায়োমেট্রিক | বায়োমেট্রিক কত প্রকার | বায়োমেট্রিক এর ব্যবহার

 

বায়োমেট্রিক কী ?  

গ্রীক শব্দ “bio” যার অর্থ Life বা প্রাণ ও  “metric” যার অর্থ পরিমাপ করা। বায়োমেট্রিক হলো বায়োলজিক্যাল(জৈবিক) ডেটা পরিমাপ এবং বিশ্লেষণ করার প্রযুক্তি।

বায়োমেট্রিক হলো এমন একটি প্রযুক্তি যেখানে কোন ব্যক্তির শারীরবৃত্তীয় অথবা আচরণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত বা সনাক্ত করা হয়।

 


বায়োমেট্রিক পদ্ধতি কি?  

অন্য ভাবে বলা যায়, বায়োমেট্রিক সিস্টেম হলো এমন একটি প্রযুক্তি যা কোনও ব্যক্তির শারীরবৃত্তীয়, আচরণগত বা উভয় বৈশিষ্ট্যকে ইনপুট হিসাবে গ্রহণ করে, এটি বিশ্লেষণ করে এবং প্রকৃত ব্যবহারকারী হিসাবে ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে।

প্রতিটি মানুষই বৈশিষ্ট্যের দিক দিয়ে স্বতন্ত্র, এই বৈশিষ্ট্যগুলোই প্রতিটি মানুষকে একে অপর থেকে আলাদা করে তুলে।বায়োমেট্রিক সিস্টেমে ব্যক্তি সনাক্তকরণের ক্ষেত্রে এই বৈশিষ্ট্যগুলো বা বায়োলজিক্যাল(জৈবিক) ডেটাগুলোকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথাঃ

শারীরবৃত্তীয়/গঠনগত(Physiological) বৈশিষ্ট্যঃ

১। ফেইস (Face)

২। আইরিস এবং রেটিনা (Iris & Retina)

৩। ফিংগার প্রিন্ট (Finger Print)

৪। হ্যান্ড জিওমেট্রি ( Hand Geometry)

৫। ডি.এন.এ (DNA)

আচরণগত(Behavioral)  বৈশিষ্ট্যঃ

১। ভয়েস (Voice)

২। সিগনেচার (Signature)

৩। টাইপিং কীস্ট্রোক ( Typing Keystroke)

 

বায়োমেট্রিক এর উপাদান 

সাধারণত, একটি বায়োমেট্রিক সিস্টেমের চারটি মূল উপাদান থাকে। যেমন- 




 

বায়োমেট্রিক সিস্টেম কীভাবে কাজ করে? 

বায়োমেট্রিক সিস্টেম সনাক্তকরণ এবং যাচাইকরণের জন্য চারটি পদক্ষেপ গ্রহণ করে –

১। প্রথমে কোন ব্যক্তির বায়োলজিক্যাল ডেটা ডিজিটাল কোড হিসেবে ডেটাবেজে সংরক্ষণ করা হয়।

২। পরবর্তীতে বায়োমেট্রিক ডিভাইস কোন ব্যক্তির বায়োলজিক্যাল ডেটা ইনপুট নিয়ে ডিজিটাল কোডে রুপান্তর করে।

৩। এই কোডকে ডেটাবেজে সংরক্ষিত কোডের সাথে তুলনা করে।

৪। যদি ডেটাবেজে সংরক্ষিত কোডের সাথে মিলে যায় তবে তাকে ডিভাইস সনাক্ত করতে সক্ষম হয়।

বায়োমেট্রিক কত প্রকার ?

মানুষের জৈবিক বৈশিষ্ট্যগুলোর উপর ভিত্তি করে বায়োমেট্রিক সিস্টেমের প্রকারভেদঃ

শারীরবৃত্তীয় সিস্টেম (Physiological System):

১। ফিংগার প্রিন্ট রিকগনিশন সিস্টেম (Fingerprint Recognition system)

২। হ্যান্ড জিওমেট্রি রিকগনিশন সিস্টেম (Hand Geometry Recognition system)

৩। ফেইস রিকগনিশন সিস্টেম (Facial Recognition System)

৪। আইরিস রিকগনিশন সিস্টেম (Iris Recognition System)

৫। রেটিনা স্ক্যানিং সিস্টেম  (Retinal Scanning System)

৬। ডি.এন.এ (DNA) রিকগনিশন সিস্টেম (DNA Recognition System)

আচরণগত সিস্টেম (Behavioral System):

১। ভয়েস রিকগনিশন সিস্টেম (Voice Recognition System)

২। সিগনেচার ভেরিফিকেশন সিস্টেম (Signature Verification System)

৩। টাইপিং কীস্ট্রোক রিকগনিশন সিস্টেম (Typing Keystroke Recognition System )

 

ফিংগার প্রিন্ট রিকগনিশন সিস্টেম (Fingerprint Recognition system)

এটি বায়োমেট্রিক সিস্টেমে ব্যক্তি সনাক্তকরণের জন্য সর্বাধিক পরিচিত এবং ব্যবহৃত বায়োমেট্রিক সিস্টেম। ফিঙ্গার প্রিন্ট প্রাচীনতম এবং সর্বাধিক জনপ্রিয় রিকগনিশন সিস্টেম। 

প্রকৃতিগতভাবে প্রতিটি মানুষের আঙ্গুলের ছাপ বা ফিঙ্গার প্রিন্ট পৃথক থাকে। আঙ্গুলের পৃষ্ঠ, খাঁজ এবং রেখার দিক এর সমন্বয়ে ফিঙ্গার প্রিন্ট গঠিত। পৃষ্ঠের তিনটি মৌলিক প্যাটার্ন রয়েছে যথা: খিলান, লুপ এবং ঘূর্ণি আকৃতির। এই বৈশিষ্ট্যগুলোর পাশাপাশি বিভাজন এবং দাগগুলো দ্বারা ফিঙ্গার প্রিন্টের স্বতন্ত্রতা নির্ধারিত হয়।

ফিঙ্গার প্রিন্ট রিডার ফিঙ্গার প্রিন্টের ডিজিটাল ছবি তৈরি করে। তারপর কম্পিউটার ফিঙ্গার প্রিন্টের ডিজিটাল ছবিটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্বাচন করে বিশ্লেষণ করে এবং প্যাটার্ন-ম্যাচিং সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে ডেটাবেজে সংরক্ষিত ফিঙ্গার প্রিন্টের নমুনার সাথে তুলনা করে কোন ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে।


ফিঙ্গার প্রিন্ট রিডার এমন একটি বায়োমেট্রিক ডিভাইস যা কোনও ফিঙ্গার প্রিন্টকে ইনপুট হিসাবে নেয় এবং ডেটাবেজে সংরক্ষিত ফিঙ্গার প্রিন্টের নমুনার সাথে তুলনা করে। 

সুবিধাঃ

১। খরচ তুলনামূলক কম।

২। সনাক্তকরণের জন্য সময় কম লাগে।

৩। এটি সবচেয়ে সমসাময়িক পদ্ধতি।

৪। এটি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য এবং সুরক্ষিত।

৫। এটি মেমোরির জায়গা কম নেয়।

অসুবিধাঃ 

১। আঙ্গুলে কোন প্রকার আস্তর লাগানো থাকলে সনাক্তকরণে সমস্যা হয়।

২। ছোট বাচ্চাদের জন্য উপযুক্ত নয়।

ব্যবহারঃ 

১। কোন প্রোগ্রাম বা ওয়েবসাইটে ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ডের পরিবর্তে আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার।

২। প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ ।

৩। ব্যাংকিং পেমেন্ট সিস্টেমে।

৪। ডিএনএ সনাক্ত করার কাজে।

 

হ্যান্ড জিওমেট্রি রিকগনিশন সিস্টেম (Hand Geometry Recognition system)

প্রতিটি মানুষের হাতের আকৃতি ও জ্যামিতিক গঠনেও ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। হ্যান্ড জিওমিট্রি পদ্ধতিতে মানুষের হাতের আকৃতি বা জ্যামিতিক গঠন ও হাতের সাইজ ইত্যাদি নির্ণয়ের মাধ্যমে মানুষকে সনাক্ত করা হয়। এই পদ্ধতিতে  হ্যান্ড জিওমেট্রি  রিডার হাতের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ, পুরুত্ব, পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল, আঙ্গুলের দৈর্ঘ্য ও অবস্থান এবং সামগ্রিকভাবে হাড়ের কাঠামো ইত্যাদি পরিমাপ করে ডেটাবেজে সংরক্ষিত হ্যান্ড জিওমেট্রির নমুনার সাথে তুলনা করে ব্যক্তি সনাক্ত করে ।

সুবিধাঃ 

১। ব্যবহার করা সহজ।

২। সিস্টেমে অল্প মেমোরির প্রয়োজন।

অসুবিধাঃ 

১। ডিভাইস গুলোর দাম তুলনামূলক বেশি।

২। ফিংগার প্রিন্ট এর চেয়ে ফলাফলের সূক্ষ্মতা কম।

ব্যবহারঃ 

১। এয়ারপোর্টের আগমন-নির্গমন নিয়ন্ত্রণ ।

২। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরীজীবীদের উপস্থিতি নির্ণয়ে।

৩। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং লাইব্রেরিতে।

ফেইস রিকগনিশন সিস্টেম (Facial Recognition System)

ফেইস রিকগনিশন সিস্টেমে মানুষের মুখের গঠন প্রকৃতি পরীক্ষা করে তাকে সনাক্ত করা হয়। এক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর মুখের চোয়াল ও চিবুকের আকার-আকৃতি, চোখের আকার ও অবস্থান, দুই চোখের মধ্যবর্তী দূরত্ব, নাকের দৈর্ঘ্য এবং ব্যাস, চোয়ালের কৌণিক পরিমাণ ইত্যাদি তুলনা করার মাধ্যমে কোন ব্যক্তিকে সনাক্ত করা হয়।

সুবিধাঃ

১। ফেইস রিকগনিশন সিস্টেম সহজে ব্যবহারযোগ্য।

২। এই পদ্ধতিতে সঠিক ফলাফল পাওয়া যায়।

অসুবিধাঃ

১। আলোর পার্থক্যের কারণে জটিলতার সৃষ্টি হয়।

২। সময়ের সাথে সাথে মুখের বৈশিষ্ট্যগুলি পরিবর্তিত হয় ফলে জটিলতার সৃষ্টি হয়।

৩। স্বতন্ত্রতা গ্যারান্টিযুক্ত নয়, উদাহরণস্বরূপ, অভিন্ন যমজদের ক্ষেত্রে।

৪। কোন ব্যবহারকারীর মুখ যদি হালকা হাসির মতো বিভিন্ন ভাব প্রকাশ করে তবে ফলাফলটি প্রভাবিত করতে পারে।

ব্যবহারঃ

১। কোন বিল্ডিং বা কক্ষের প্রবেশদ্বারে।

২। কোন আইডি নম্বর সনাক্তকরণে ।

 

আইরিস রিকগনিশন সিস্টেম (Iris Recognition System)

বায়োমেট্রিক প্রযুক্তিতে ব্যক্তি সনাক্তকরনের জন্য চোখের আইরিসকে আদর্শ অঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আইরিস রিকগনিশন সিস্টেমে মানুষের চোখের আইরিস প্যাটার্নের ভিত্তিতে কাজ করে। একজন ব্যক্তির চোখের আইরিস এর সাথে অন্য ব্যক্তির চোখের আইরিস এর প্যাটার্ন সবসময় ভিন্ন হয়।

চোখের অক্ষিগোলকের সামনের লেন্সের ওপরে অবস্থিত রঙিন পর্দাকে আইরিশ বলে। চোখের মাঝে গাঢ় গোল অংশটির নাম পিউপিল বা চোখের মণি। এর চারপাশেই আইরিশের অবস্থান। এটি পিউপিলের ছোট বা বড় হওয়ার আকার নিয়ন্ত্রণ করে। চোখের আইরিশ যখন প্রসারিত হয়, তখন পিউপিল ছোট হয়ে যায়। আবার আইরিশ সংকুচিত হলে পিউপিল বড় হয়। আইরিশ দেখতে অনেকটা আংটির মতো। এটি বাদামি, সবুজ, নীল—বিভিন্ন রঙের হয় এবং আলোর তীব্রতার ওপর নির্ভর করে সংকুচিত বা প্রসারিত হয়। এতে পিউপিলের আকার পরিবর্তনসহ লেন্স ও রেটিনায় আপতিত আলোর পরিমাণ নিয়ন্ত্রিত হয়।আইরিস রিকগনিশন সিস্টেমে চোখের চারপার্শ্বে বেষ্টিত রঙিন বলয় বিশ্লেষণ ও পরীক্ষা করা হয়।

সুবিধাঃ 

১। এটি অত্যন্ত নির্ভুল কারণ দুটি আইরিস মিলের সম্ভাবনা ১0 বিলিয়ন লোকের মধ্যে ১ জন। 

২। আইরিস প্যাটার্নটি কোনও ব্যক্তির জীবদ্দশায় একই থাকে বলে এটি অত্যন্ত আদর্শ।

৩। ব্যবহারকারীকে চশমা বা যোগাযোগের লেন্স অপসারণ করতে হবে না; কারণ তারা সিস্টেমের নির্ভুলতার বাধা দেয় না।

৪। এটি সিস্টেমের সাথে কোনও শারীরিক সংযোগ থাকে না। 

৫। সনাক্তকরণে খুবই কম সময় লাগে।

৬। এতে ছোট আকারের টেম্পলেটের  কারণে তাত্ক্ষণিক সনাক্তকরণ (২ থেকে ৫ সেকেন্ড) করতে পারে। 

অসুবিধাঃ

১। আইরিস স্ক্যানার ব্যয়বহুল।

২। তুলনামূলকভাবে বেশি মেমোরির প্রয়োজন হয়।

৩। কোন ব্যক্তির সঠিক স্ক্যান করার জন্য তার মাথাটি স্থির রাখতে হয়।

ব্যবহারঃ

১। এই সিস্টেমটি পাসপোর্ট ছাড়াই বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দেয়।

২। এছাড়া সরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, মিলিটারি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদিতেও সনাক্তকরণ কাজে ব্যবহার করা হয়।

৩। গুগল তাদের ডেটা সেন্টারে অ্যাক্সেসের জন্য আইরিস রিকগনিশন ব্যবহার করে।

রেটিনা স্ক্যানিং সিস্টেম  (Retinal Scanning System)

রেটিনা হলো চোখের বলের পিছনের একটি আস্তরণ স্তর যা চোখের বলের ভিতরের পৃষ্ঠের 65% জুড়ে থাকে। এটিতে আলোক সংবেদনশীল কোষ রয়েছে। রক্ত সরবরাহকারী রক্তনালীগুলির জটিল নেটওয়ার্কের কারণে প্রতিটি ব্যক্তির রেটিনা ভিন্ন।


রেটিনা স্ক্যানিং সিস্টেমে একজন ব্যক্তিকে লেন্স বা চশমা অপসারণ করতে বলা হয়। 10 থেকে 15 সেকেন্ডের জন্য ব্যক্তির চোখের মধ্যে একটি নিম্ন-তীব্রতার ইনফ্রারেডেরের আলোক রশ্মি কাস্ট করা হয়। স্ক্যানের সময় রক্তনালীগুলো এই ইনফ্রারেড আলো শোষণ করে এবং একটি প্যাটার্ন গঠন করে । তারপর এই প্যাটার্নটি ডিজিটাইজড হয় এবং ডেটাবেজে সংরক্ষিত হয়। 

রেটিনা স্ক্যানিং সিস্টেম একটি নির্ভরযোগ্য সিস্টেম, কারণ ডায়াবেটিস, গ্লুকোমা বা কিছু ডিজঅর্ডার জনিত রোগ না থাকলে রেটিনা প্যাটার্নটি ব্যক্তির সারাজীবন অপরিবর্তিত থাকে।

রেটিনা স্কান পদ্ধতিতে চোখের পিছনের অক্ষিপটের মাপ ও রক্তের লেয়ারের পরিমাণ বিশ্লেষণ ও পরিমাপ করা হয়। এই পদ্ধতিতে চোখ ও মাথাকে স্থির করে একটি ডিভাইসের সামনে দাড়াতে হয়।

 

সুবিধাঃ

১। সনাক্তকরণে খুবই কম সময় লাগে।

২। সনাক্তকরণে ফলাফলের সূক্ষ্মতা তুলনামুলকভাবে অনেক বেশি।

৩। এটি একটি উচ্চ নিরাপত্তামূলক সনাক্তকরণ ব্যবস্থা যা স্থায়ী।

অসুবিধাঃ 

১। এই পদ্ধতি অত্যন্ত ব্যয়বহুল।

২। তুলনামূলকভাবে বেশি মেমোরির প্রয়োজন হয়।

৩। ডিভাইস ব্যবহারের সময় চশমা খোলার প্রয়োজন হয়।

৪। কোন ব্যক্তির সঠিক স্ক্যান করার জন্য তার মাথাটি স্থির রাখতে হয়।

ব্যবহারঃ 

১। এই পদ্ধতির প্রয়োগে পাসপোর্টবিহীন এক দেশের সীমা অতিক্রম করে অন্য দেশে গমন করা যেতে পারে যা বর্তমানে ইউরোপে ব্যবহৃত হচ্ছে।

২। এছাড়া সরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, মিলিটারি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদিতেও সনাক্তকরণ কাজে ব্যবহার করা হয়।

 

ডি.এন.এ (DNA) রিকগনিশন সিস্টেম (DNA Recognition System)

Deoxyribo Nucleic Acid (DNA) হলো জিনগত উপাদান যা কোষের নিউক্লিয়াসে অবস্থিত। প্রতিটি মানুষ তার ডিএনএতে পাওয়া বৈশিষ্ট্যগুলো দ্বারা চিহ্নিত করা যায়।

DNA টেস্টের মাধ্যমে যেকোন ব্যক্তিকে অত্যন্ত নিখুঁত ও প্রশ্নাতীতভাবে শনাক্ত করা যায়।

DNA যে কোন উৎস থেকে সংগ্রহ করা যেতে পারে। যেমন- রক্ত, চুল, আঙুলের নখ, মুখের ত্বক, রক্তের দাগ, লালা এবং একবার বা দুবার ব্যবহার করা যেকোন জিনিস থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করা যায়।

ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের এর সাহায্যে ব্যক্তি সনাক্তকরণের বিষয়টি অনেক বেশি বিজ্ঞান সম্মত। কোন ব্যক্তির দেহ কোষ থেকে ডিএনএ আহরণ করার পর তার সাহায্যেই কতিপয় পর্যায়ক্রমিক ধাপ অনুসারে ঐ ব্যক্তির ডিএনএ প্রোফাইল করতে হয়। 

ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের মৌলিক ধাপগুলো হলো-  

১। রক্ত, লালা, চুল ইত্যাদি থেকে অর্জিত নমুনা থেকে ডিএনএ পৃথক করা।

২। ডিএনএ নমুনাকে ছোট ছোট সেগমেন্টে ভাগ করা।

৩। আকার অনুযায়ী ডিএনএ সেগমেন্টেগুলোকে সংগঠিত করা।

৪। বিভিন্ন নমুনা থেকে ডিএনএ সেগমেন্টেগুলোকে তুলনা করা।

 

সুবিধাঃ 

১। পদ্ধতিগত কোন ভুল না থাকলে সনাক্তকরণে সফলতার পরিমাণ প্রায় শতভাগ।

অসুবিধাঃ

১। ডিএনএ ফিংগার প্রিন্টিং তৈরি ও সনাক্তকরণের জন্য কিছু সময় লাগে।

২। ডিএনএ প্রোফাইলিং করার সময় পদ্ধতিগত ভুল ডিএনএ ফিংগার প্রিন্টিং এর ভুলের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।

৩। সহোদর যমজদের ক্ষেত্রে ডিএনএ ফিংগার প্রিন্টিং সম্পূর্ণ এক হয়।

৪। তুলনামূলক খরচ বেশি।

ব্যবহারঃ 

১। অপরাধী সনাক্তকরণে

২। পিতৃত্ব নির্ণয়ে

৩। বিকৃত শবদেহ শনাক্তকরণে

৪। লুপ্তপ্রায় প্রাণীদের বংশ বৃদ্ধির জন্য

৫। চিকিৎসা বিজ্ঞানে

 

ভয়েস রিকগনিশন সিস্টেম (Voice Recognition System)

ভয়েস এবং স্পিচ রিকগনিশন দুটি পৃথক বায়োমেট্রিক পদ্ধতি যা মানুষের কণ্ঠের উপর নির্ভরশীল। উভয়ই যোগাযোগহীন, সফ্টওয়্যার ভিত্তিক প্রযুক্তি। 

ভয়েস রিকগনিশন, সাধারণত ভয়েসপ্রিন্ট হিসাবেও উল্লেখ করা হয়, এটি ভোকালের সাহায্যে ব্যক্তি সনাক্তকরণ পদ্ধতিগুলোর মধ্যে অন্যতম।

ভয়েস রিকগনিশন পদ্ধতিতে, ব্যবহারকারীর কণ্ঠস্বরকে মাইক্রোফোনের সাহায্যে ইনপুট নিয়ে তা সফটওয়্যারের সাহায্যে ইলেকট্রিক সিগন্যালে রুপান্তর করে প্রথমে ডেটাবেজে সংরক্ষণ করতে হয়। পরবর্তীকালে ভয়েস রেকর্ডারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর কণ্ঠস্বর রেকর্ড করা হয় এবং ডেটাবেজে সংরক্ষিত ভয়েস ডেটা ফাইলের সাথে তুলনা করে কোন ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়।

সুবিধাঃ 

১। সহজ ও কম খরচে বাস্তবায়নযোগ্য সনাক্তকরণ পদ্ধতি।

অসুবিধাঃ 

১। অসুস্থতা (সর্দি, কাশি) জনিত কারনে কোন ব্যবহারকারীর কন্ঠ পরিবর্তন হলে সেক্ষেত্রে শনাক্তকরণে সমস্যা হয়।

২। সূক্ষ্মতা তুলনামূলকভাবে কম।

ব্যবহারঃ 

১। অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এই পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে।

২। টেলিফোনের মাধ্যমে লেনদেনের ক্ষেত্রে ভয়েস রিকগনিশন সিস্টেম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৩। টেলিকমিউনিকেশন সিস্টেমের নিরাপত্তায়।

 

সিগনেচার ভেরিফিকেশন সিস্টেম (Signature Verification System)

সিগনেচার ভেরিফিকেশন পদ্ধতিতে বিশেষ ধরণের একটি কলম এবং প্যাড বা টেবলেট পিসি ব্যবহার করা হয়। বিশেষ কলম ব্যবহার করে ডিজিটাল প্যাডে স্বাক্ষর করতে হয়। এই পদ্ধতিতে স্বাক্ষরের আকার, লেখার গতি, লেখার সময় এবং কলমের চাপকে পরীক্ষা করে ব্যবহারকারীর স্বাক্ষর সনাক্ত করা হয়।

এটি একটি বহুল ব্যবহৃত ও দীর্ঘদিনের প্রচলিত পদ্ধতি।

সুবিধাঃ 

১। এটি সর্বস্থরের গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি।

২। এই পদ্ধতি ব্যবহারে খরচ কম।

৩। সনাক্তকরণে কম সময় লাগে।

অসুবিধাঃ

১। যারা স্বাক্ষর জানে না তাদের জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করা যায় না।

ব্যবহারঃ 

১। ব্যাংক-বীমা এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে স্বাক্ষর সনাক্তকরণের কাজে এই পদ্ধতি ব্যবহার হয়ে থাকে।

 

টাইপিং কীস্ট্রোক রিকগনিশন সিস্টেম (Typing Keystroke Recognition System )

টাইপিং কীস্ট্রোক রিকগনিশন সিস্টেমে ব্যবহারকারীর টাইপিং ধরণ, ছন্দ এবং কীবোর্ডে টাইপের গতি বিশ্লেষণ করে ব্যক্তি সনাক্ত করা হয়। কীস্ট্রোক রিকগনিশন সিস্টেমে dwell time এবং flight time ব্যবহৃত হয়।

dwell time – যতক্ষণ সময় কী(KEY) টি চাপ দেওয়া হয় 

flight time – একটি কী ছেড়ে দেওয়া এবং পরবর্তী কী চাপ দেওয়ার মধ্যবর্তী সময়

বায়োমেট্রিক সিস্টেমের ব্যবহার / বায়োমেট্রিক কোথায় ব্যবহৃত হয় ?

বায়োমেট্রিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রসমূহ

১। কোন কক্ষ, প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যার ও যেকোন ডিজিটাল সিস্টেম এর প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ।

২। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক বা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীর উপস্থিতি রেকর্ড করতে।

৩। বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট তৈরিতে।

৪। ড্রাইভিং লাইসেন্স তৈরিতে।

৫। ই-কমার্স ও স্মার্ট কার্ড তৈরিতে ।

৬। ATM ও অনলাইন ব্যাংকিং নিরাপত্তায়।

৭। অপরাধী সনাক্তকরণে।

৮। পিতৃত্ব বা মাতৃত্ব নির্ণয়ে।

৯। বিকৃত মৃতদেহ শনাক্তকরণে।

১০। লুপ্তপ্রায় প্রাণীদের বংশ বৃদ্ধির জন্য।

১১। জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরিতে।

 

বায়োমেট্রিক এর সুবিধা 

  • পাসওয়ার্ড ভুলে যাওয়া বা চুরি হওয়ার কোন সমস্যা নেই
  • ইতিবাচক এবং নির্ভুল সনাক্তকরণ
  • সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা
  • নিরাপদ এবং ব্যবহার বান্ধব

NAME: ICT HEAD

MOBILE: 01818799572

Follow us on Facebook : Click here to see more

ADDRESS: Dhaka, Bangladesh

Previous Post Next Post

Making Ict Easier For Everyone

HSC ICT

Contact Form