HSC ICT chapter:2 নেটওয়ার্ক ডিভাইস – মডেম, হাব, সুইচ, রাউটার, রিপিটার, ব্রিজ, গেটওয়ে

 

নেটওয়ার্ক ডিভাইস কী? 

কম্পিউটার, প্রিন্টার, ফ্যাক্স মেশিন এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস একটি নেটওয়ার্কের সাথে সংযোগ করতে ব্যবহৃত হার্ডওয়্যার ডিভাইসগুলোকে নেটওয়ার্ক ডিভাইস বলে। এই ডিভাইসগুলো একই বা ভিন্ন নেটওয়ার্কে দ্রুত, নিরাপদ এবং সঠিক উপায়ে ডেটা স্থানান্তর করে। নেটওয়ার্ক ডিভাইসগুলো ইন্টার-নেটওয়ার্ক বা ইন্ট্রা-নেটওয়ার্ক হতে পারে।

 

নেটওয়ার্ক ডিভাইসসমূহঃ 

মডেম কী? 

মডেম হচ্ছে একটি নেটওয়ার্ক ডিভাইস যা মডুলেশন ও ডিমডুলেশনের মাধ্যমে এক কম্পিউটারের তথ্যকে অন্য কম্পিউটারে টেলিফোন লাইনের সাহায্যে পৌঁছে দেয়। মডেম শব্দটি  Modulator ও  Demodulator এর সংক্ষিপ্তরূপ। Modulator শব্দের ‘Mo’ এবং Demodulator শব্দের ‘Dem’ নিয়ে ‘Modem’ শব্দটি গঠিত হয়েছে। Modulator এর  কাজ হচ্ছে ডিজিটাল সিগন্যালকে অ্যানালগ সিগন্যালে রূপান্তর করা এবং Demodulator এর  কাজ হচ্ছে অ্যানালগ সিগন্যালকে ডিজিটাল সিগন্যালে রূপান্তর করা।

উৎস কম্পিউটারের সাথে যুক্ত মডেম কম্পিউটারের ডিজিটাল সিগন্যালকে অ্যানালগ সিগন্যালে রূপান্তর করে টেলিফোন যোগাযোগ ব্যবস্থা দ্বারা গ্রাহকের নিকট ডেটা বা তথ্য প্রেরণ করে। এভাবে টেলিফোন লাইনের উপযোগী করে ডিজিটাল সিগন্যালকে অ্যানালগ সিগন্যালে পরিবর্তনের প্রক্রিয়াকে মডুলেশন বলে।

গন্তব্য কম্পিউটারের সঙ্গে যুক্ত মডেম সেই অ্যানালগ সিগন্যালকে আবার ডিজিটাল সিগন্যালে রূপান্তর করে তা কম্পিউটারের ব্যবহারোপযোগী করে। এভাবে টেলিফোন লাইন থেকে প্রাপ্ত অ্যানালগ সিগন্যালকে ডিজিটাল সিগন্যালে রূপান্তরের প্রক্রিয়াকে ডিমডুলেশন বলে।



এভাবে ডেটা কমিউনিকেশনে মডেম মডুলেশন এবং ডিমডুলেশনের সাহায্যে ডেটা উৎস থেকে গন্তব্যে প্রেরণ করে থাকে। এছাড়া ডেটা কমিউনিকেশনে মডেম একইসাথে প্রেরক এবং প্রাপক হিসেবে কাজ করে।

NIC কী? 

NIC এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Network Interface Card । কম্পিউটারকে নেটওয়ার্ক এর সাথে সংযুক্ত করার জন্য নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড ব্যবহার করা হয়। এ কার্ডকে ল্যান কার্ড বা নেটওয়ার্ক অ্যাডাপ্টারও বলে। ল্যান কার্ড মাদারবোর্ডের বিভিন্ন আকৃতির  স্লটের মধ্যে বসানো থাকে। অধিকাংশ NIC কম্পিউটারের সাথে বিল্ট-ইন থাকে। ল্যান কার্ডে ৪৮ বিটের একটি অদ্বিতীয় কোড থাকে। এই অদ্বিতীয় কোডকে ম্যাক (MAC- Media Access Control) অ্যাড্রেস বলে। এই ম্যাক অ্যাড্রেস কার্ডের রমে সংরক্ষিত  থাকে। নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড ডিভাইস এবং ডেটা কেবলের মধ্যে সিগন্যাল আদান-প্রদানের কাজটি সমন্বয় করে থাকে। NIC এ RJ45 সকেট থাকে যেখানে নেটওয়ার্ক ক্যাবলটি প্লাগ ইন করা হয়।


রিপিটার কী? 

একটি নেটওয়ার্ক মিডিয়ার মধ্য দিয়ে ডেটা সিগন্যাল প্রবাহের সময় নির্দিষ্ট দূরত্ব অতিক্রম করার পর এটেনুয়েশনের কারণে সিগন্যাল আস্তে  আস্তে  দূর্বল হয়ে পড়ে। তখন এই সিগন্যালকে পুনরোদ্ধার করে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়। মাঝামাঝি অবস্থানে থেকে এই কাজটি যে ডিভাইস করে থাকে তাকে রিপিটার বলে। এটি একটি  ২-পোর্ট বিশিষ্ট ডিভাইস। রিপিটার ফিজিক্যাল লেয়ারে কাজ করে।

হাব কী? 

হাব একটি নেটওয়ার্ক ডিভাইস এবং একে LAN ডিভাইসও বলা হয়। যার সাহায্যে নেটওয়ার্কের কম্পিউটারসমূহ পরস্পরের সাথে কেন্দ্রিয়ভাবে যুক্ত থাকে। একটি হাবে কতোগুলো ডিভাইস যুক্ত করা যাবে তা হাবের পোর্ট সংখ্যার উপর নির্ভর করে। LAN তৈরি করার জন্য হাব অধিক ব্যবহৃত হয়। স্টার টপোলজির ক্ষেত্রে হাব হচ্ছে কেন্দ্রীয় ডিভাইস।

কোন প্রেরক হাবে ডেটা প্রেরণ করলে হাবে সংযুক্ত সকল ডিভাইসে সেই ডেটা বা সংকেত ব্রডকাস্ট হয়। এক্ষেত্রে যে ডিভাইসটির জন্য সংকেত পাঠানো হয় সেই ডিভাইসটি কেবলমাত্র গ্রহণ করে। ফলে নেটওয়ার্কের ট্রাফিক বৃদ্ধি পায় এবং ডেটা আদান-প্রদানে বাধা বা কলিশনের সম্ভাবনা থাকে। হাবকে মাল্টি-পোর্ট রিপিটারও বলা হয়।

হাবের প্রকারভেদ

সক্রিয় হাব:

সক্রিয় হাবগুলোর  নিজস্ব বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকে এবং নেটওয়ার্কের সাথে সিগন্যালটি ক্লিন, বুস্ট এবং রিলে করতে পারে। এটি রিপিটারের পাশাপাশি তারের কেন্দ্র উভয় হিসেবে কাজ করে। নোডের মধ্যে সর্বাধিক দূরত্ব বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হয়।

নিস্ক্রিয় হাব:

নিস্ক্রিয় হাব ডেটা সিগন্যালকে একই ফরম্যাটে ফরোয়ার্ড করে। এটি কোনও ভাবেই ডেটা সিগন্যালকে পরিবর্তন করে না। নিস্ক্রিয় হাব যা নোডগুলো থেকে তারের সংগ্রহ করে এবং সক্রিয় হাব থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। এই হাবগুলো সিগন্যালকে ক্লিন, বুস্ট না করেই নেটওয়ার্কে রিলে করে এবং নোডের মধ্যে দূরত্ব বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা যায় না।

 

হাবের সুবিধা:

১। তুলনামূলকভাবে দাম কম।

২। বিভিন্ন মিডিয়ামকে সংযুক্ত করতে পারে।

 

হাবের অসুবিধা:

১। নেটওয়ার্কে ট্রাফিক বৃদ্ধি পায়।

২। ডেটা আদান-প্রদানে বাধার সম্ভাবনা থাকে।

৩। ডেটা ফিল্টারিং সম্ভব হয় না।

সুইচ কী? 

হাব এর ন্যায় সুইচও একটি নেটওয়ার্ক ডিভাইস এবং একে LAN ডিভাইসও বলা হয়। যার সাহায্যে নেটওয়ার্কের কম্পিউটারসমূহ পরস্পরের সাথে কেন্দ্রিয়ভাবে যুক্ত থাকে। একটি সুইচে কতোগুলো ডিভাইস যুক্ত করা যাবে তা সুইচের পোর্ট সংখ্যার উপর নির্ভর করে। সুইচে পোর্টের সংখ্যা ৮, ১৬,২৪ থেকে ৪৮ পর্যন্ত হতে পারে। LAN তৈরির ক্ষেত্রে হাবের চেয়ে সুইচ বেশি ব্যবহৃত হয়। স্টার টপোলজির ক্ষেত্রে সুইচ হচ্ছে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণকারী ডিভাইস।

হাবের সাথে সুইচের পার্থক্য হলো হাব প্রেরক থেকে প্রাপ্ত সংকেত সকল পোর্টে পাঠায় কিন্তু সুইচ প্রেরক থেকে প্রাপ্ত সংকেত কম্পিউটারের MAC অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নির্দিস্ট পোর্টে পাঠিয়ে দেয়। ফলে সুইচ ব্যবহার করে নেটওয়ার্কের ডেটা আদান-প্রদানে বাধা বা কলিশনের সম্ভাবনা থাকে না।



সুইচের সুবিধা:

১। ডেটা আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে বাধার সম্ভাবনা নেই।

২। ডেটা ফিল্টারিং সম্ভব।

৩। দুর্বল হয়ে পড়া সংকেত বর্ধিত করে গন্তব্যে প্রেরণ করে।

 

সুইচের অসুবিধা:

১। হাবের তুলনায় মূল্য কিছুটা বেশি।

২। কনফিগারেশন তুলনামূলকভাবে জটিল।

ব্রিজ কী? 

ব্রিজ একটি নেটওয়ার্ক ডিভাইস যা একটি বৃহৎ নেটওয়ার্ককে ছোট ছোট সেগমেন্টে বিভক্ত করে। এর সাহায্যে ভিন্ন মাধ্যম অথবা ভিন্ন কাঠামো বিশিষ্ট একাধিক নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করা যায়। এটি একাধিক ছোট নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করে একটি বৃহৎ নেটওয়ার্ক তৈরি করে। এটি অনেকটা সুইচ বা হাব এর মতো। এক্ষেত্রে পার্থক্য হলো, হাব বা সুইচ একই নেটওয়ার্কের বিভিন্ন নোডকে সংযুক্ত করে অন্যদিকে ব্রিজ একাধিক ছোট নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করে।

১। ভিন্ন মাধ্যম বিশিষ্ট অথবা ভিন্ন কাঠামো বা টপলোজি বিশিষ্ট একাধিক নেটওয়ার্কে যুক্ত করতে পারে।

 

ব্রিজের অসুবিধাঃ

১। ভিন্ন প্রোটকল বিশিষ্ট নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করতে পারে না।

 

রাউটার কী? 

রাউটার একটি নেটওয়ার্ক ডিভাইস এবং একে WAN ডিভাইসও বলা হয়। এটি একটি বুদ্ধিমান ডিভাইস যা একই প্রটোকল বিশিষ্ট দুই বা ততোধিক নেটওয়ার্ককে(LAN,MAN,WAN) সংযুক্ত করে WAN তৈরি করে।

রাউটার রাউটিং টেবিল ব্যবহার করে উৎস থেকে গন্তব্যে ডেটা স্থানান্তরের জন্য সহজ, নিরাপদ ও কম দূরত্বের পথটি বেছে নেয়। রাউটার ডেটা আদান-প্রদানের সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে রাউটিং টেবিল তৈরি করে, যেখানে নেটওয়ার্কের সকল নোডের অ্যাড্রেস এবং পাথ থাকে। রাউটিং টেবিলটি রাউটারের মেমোরিতে সংরক্ষিত থাকে। এক নেটওয়ার্ক থেকে অন্য নেটওয়ার্কে ডেটা পাঠানোর পদ্ধতিকে রাউটিং বলে। এটি একাধিক LAN, MAN এবং WAN কে যুক্ত করে WAN গঠন করতে পারে।

রাউটারের সুবিধা:

১। ডেটা ট্রান্সমিশনের ক্ষেত্রে বাধার সম্ভাবনা কমায়।

২। ডেটা ফিল্টারিং সম্ভব হয়।

৩। বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ক যেমন-ইথারনেট, টোকেন, রিং ইত্যাদিকে সংযুক্ত করতে পারে।

 

রাউটারের অসুবিধা:

১। রাউটারের দাম বেশি।

২। রাউটার ভিন্ন প্রোটোকলের নেটওয়ার্কে সংযুক্ত করতে পারে না।

৩। কনফিগারেশন তুলনামূলক জটিল।


গেটওয়ে কী? 

গেটওয়ে একটি নেটওয়ার্ক ডিভাইস এবং একে WAN ডিভাইসও বলা হয়। এটি ভিন্ন প্রটোকল বিশিষ্ট দুই বা ততোধিক নেটওয়ার্ককে(LAN,MAN,WAN) সংযুক্ত করে WAN তৈরি করে। ভিন্ন প্রোটোকল বিশিষ্ট নেটওয়ার্ক সংযুক্ত করার সময় গেটওয়ে প্রটোকল ট্রান্সলেশন করে থাকে। বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইস যেমন – হাব, সুইচ এবং রাউটার ইত্যাদি ডিভাইসসমূহ প্রোটোকল ট্রান্সলেশনের সুবিধা দেয় না।





গেটওয়ের সুবিধা

১। রাউটারের চেয়ে দ্রুত গতিসম্পন্ন এবং ডেটার কলিশন বা সংঘর্ষ কম।

২। ভিন্ন প্রোটোকল বিশিষ্ট নেটওয়ার্ক সংযুক্ত করতে পারে।

৩। ডেটা ফিল্টারিং করতে পারে।

 

গেটওয়ের অসুবিধা

১। অন্যান্য ডিভাইসের চেয়ে ব্যয়বহুল।

৩। কনফিগারেশন করা তুলনামূলক জটিল।

 

নেটওয়ার্কে বিভিন্ন নেটওয়ার্ক ডিভাইসসমূহের ব্যবহার





NAME: ICT HEAD

MOBILE: 01818799572

Follow us on Facebook : Click here to see more

ADDRESS: Dhaka, Bangladesh








Previous Post Next Post

Making Ict Easier For Everyone

HSC ICT

Contact Form